সোমবার, ০৬ মে ২০২৪, ০৭:২৯ অপরাহ্ন

যে কারণে নারীরা কাজী হতে পারবেন না

যে কারণে নারীরা কাজী হতে পারবেন না

দেশের সামাজিক ও বাস্তব অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে নারীরা নিকাহ রেজিস্ট্রার হতে পারবেন না মর্মে নির্দেশনা দিয়ে পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করেছেন হাইকোর্ট। দিনাজপুরের এক নারী রেজিস্ট্রার প্রার্থীর রিট খারিজ করে বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরী ও বিচারপতি কাজী জিনাত হকের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় প্রকাশ করেন। রোববার (১০ জানুয়ারি) পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রিটকারী আইনজীবী মো. হুমায়ুন কবির।

অ্যাডভোকেট মো. হুমায়ুন কবির বলেন, আদালত রায়ের পর্যবেক্ষণে বলেছেন, নারীরা মাসের একটি নির্দিষ্ট সময় ফিজিক্যাল ডিসকোয়ালিফেশন থাকেন।  মুসলিম বিবাহ হচ্ছে একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠান এবং আমাদের দেশে বেশির ভাগ বিয়ের অনুষ্ঠান হয় মসজিদে। ওই সময় নারীরা মসজিদে প্রবেশ করতে পারেন না এবং তারা নামাজও পড়তে পারেন না।  সুতরাং বিয়ে যেহেতু একটা ধর্মীয় অনুষ্ঠান। এ বাস্তবতার পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশে নারীদের দিয়ে নিকাহ রেজিস্ট্রারের দায়িত্ব পালন সম্ভব নয়। এই পর্যবেক্ষণ দিয়ে আদালত রুল খারিজ করে দিয়েছেন।

ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এস কে সাইফুজ্জামান বলেন, আদালত পর্যবেক্ষণ দিয়েছেন, মুসলিম ম্যারেজ রেজিস্ট্রারদের কিছু নিয়ম কানুন মেনে চলতে হয়।  কিন্তু প্রাকৃতিকভাবে নারীদের প্রত্যেক মাসে একটি বিশেষ সময় আসে যে সময়টাতে ধর্মীয় ভাবেই নারীরা মসজিদে যেতে পারেন না। আবার নামাজও পড়তে পারেন না।  এ রকম সময় যদি কারো বিয়ের অনুষ্ঠান হয়। সেখানে তো কোনো নারী যেতে পারবেন না। অন্যান্য পাবলিক অফিসে নারীরা যে কাজ করেন, আর ম্যারেজ রেজিস্ট্রার হিসেবে কার্যক্রমটা আলাদা। বিয়ে শুধু সামাজিক অনুষ্ঠান নয়, এটা ধর্মীয় অনুষ্ঠানও বলে মন্তব্য করেছেন আদালত।

এদিকে ফাউন্ডেশন ফর ল’ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের পক্ষ থেকে হাইকোর্টের এ রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করা হবে বলে জানিয়েছেন সংস্থাটির চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট ফাওজিয়া করিম। তিনি বলেন, দেশের প্রধানমন্ত্রী নারী, নারীরা বিমানের পাইলট হচ্ছেন, সশস্ত্র বাহিনীতে নারীরা কাজ করছেন। তাহলে কেন নারীরা নিকাহ রেজিস্ট্রার হতে পারবেন না? এর আগে গত বছরের ২৬ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশের সামাজিক ও বাস্তব অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে নারীরা নিকাহ রেজিস্ট্রার হতে পারবেন না মর্মে আইন মন্ত্রণালয়ের সিন্ধান্ত বহাল রেখে রায় দেন হাইকোর্ট। দিনাজপুরের এক নারী রেজিস্ট্রার প্রার্থী আয়েশা সিদ্দিকার রিট খারিজ করে বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরী ও বিচারপতি কাজী জিনাত হকের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন।

আইনজীবী মো. হুমায়ন কবির জানান, ২০১৪ সালে দিনাজপুর জেলার ফুলবাড়িয়ার পৌরসভার ৭, ৮ ও ৯ নম্বর ওয়ার্ডের  নিকাহ রেজিস্ট্রার হিসেবে তিন জন নারীর নাম প্রস্তাব করে উপদেষ্টা কমিটি। তিন সদস্যর এ প্যানেল আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। ২০১৪ সালের ১৬ জুন আইন মন্ত্রণালয় ‘বাংলাদেশের বাস্তব অবস্থার প্রেক্ষিতে নারীদের দ্বারা নিকাহ রেজিস্ট্রারের দায়িত্ব পালন করা সম্ভব নয়‘ মর্মে চিঠি দিয়ে তিন সদস্যর প্যানেল বাতিল করেন। পরে আইন মন্ত্রণালয়ের এ সিন্ধান্ত চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট করেন নিকাহ রেজিস্ট্রারের প্যানেলে এক নম্বর ক্রমিকে থাকা আয়েশা সিদ্দিকা। রিটের শুনানি নিয়ে আদালত আইন মন্ত্রণালয়ের চিঠি কেন বাতিল করা হবে না-এই মর্মে রুল জারি করেন। ২৬ ফেব্রুয়ারি রুলের চূড়ান্ত শুনানি শেষে হাইকোর্ট রিট আবেদনটি খারিজ করে দেন।

 

Print Friendly, PDF & Email

নিউজটি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন




Archive Calendar

Mon Tue Wed Thu Fri Sat Sun
 12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
2728293031  




All rights reserved@KathaliaBarta 2023
Design By Rana